শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০১৪

নিজেকে নতুন করে চেনা

১৫।০৩।১৪

 

 

দিনটি শুরু করেছিলাম অনেক স্বপ্ন নিয়ে। যদিও মনে ছিল অনেক সংশয়। আমরা আশা করি অনেক, কিন্ত পাই খুব অল্প। তাই আজকে আশা করে গিয়েছিলাম অনেক, তার মাঝে পেয়েছি আমার আসল জিনিসটি।

পৃথিবীতে কিছু মানুষের জন্ম হয় শুধু কষ্ট পাবার জন্য এবং একের পর এক ভুল করার জন্য। আমি সেইরকম একটি মানুষ। অনেক ভুলের পরেও আমার শিক্ষা হইনা। এটাই আমার ভাগ্য। আগে কোন চেষ্টা করতাম নাহ ভুল না করার জন্য, আজ চেয়েছিলাম কোন ভুল করবনা। কপালের লিখন, না যায় খণ্ডন। আবারো ভুল করলাম। খুলেই বলি সব, এই লিখা আমি ছাড়া আর কেও পরবেনা হইত কোনদিন। সেহেতু নিজের সাথে নিজেই কিছু কথা বলি :-) এখানে আমি কোনো মিথ্যে কথা বলবনা।

আগের অনেক কথা বাদ ই দিলাম, শুধু বলি, তার সাথে আমার সম্পর্ক ৫ বছরের ওপরে। সেই মানুষটার আর ২ দিন পরে বিয়ে। নাহ আমার সাথে নয়। তার পরিবারের পছন্দের ছেলের সাথে। তার নাম "RAK", ছদ্দনাম দিলাম । সে দুবাই তে আরএকে সিরামিক্স এ জব করে, বছরে ১ মাস ছুটি পায়। ১৯ই April তার flight। ব্রামন্বারিয়াতে (আল আমিন হোটেলের কাছে) তার বাড়ি। বাবুর ফাইনাল exam শেষ হলে, বাবুকে দুবাই নিয়ে যাবে। তার সম্পর্কে এটুকই জানি, যা শুনেছি তার মুখে। এবার মূল কথাই আসি।

আজ গিয়েছিলাম তার সাথে আমার পক্ষ থেকে শেষ দেখা করতে। ভোরে ঘুম থেকে ওঠেই রওনা দিয়েছিলাম এবং সারে ১১ টার দিকে গিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ গিয়ে পৌঁছলাম। সেখান থেকে আধা গন্টার মাঝে হবিগাঞ্জ পৌঁছলাম। তাকে ফোন করলাম, আমি এসেছি। এর মাঝে রিকশা ঠিক করলাম, এবং হোটেল শাপলা তে রুম নিলাম। সেখানেই শুনলাম, আজ বিকেল ৫ টা পর্যন্ত পুরা শহরে বিদ্যুৎ থাকবেনা। হয়ত আমার জীবন টা আধারে ডেকে যাবে ভেবেই, এই শহর আগেই আমাকে সংকেত দিল।

একটা রিকশা ২ দিনের জন্য ঠিক করলাম, মনে তখন অনেক স্বপ্ন। গেলাম তাঁর বাসার সামনে। হবিগাঞ্জ সদর হাস্পাতাল থেকে বাম পাশে পাসপোর্ট অফিস এর পাশে। বাড়ির নাম "নাইবা বল্লাম"। তাকে ফোন দিলাম, প্রথমে সে ২ তালার জানালার পাশে দাঁড়ালো। ভালো করে তাকাতেও পারছিলাম না। তাঁকে বল্লাম, ছাঁদে আসতে। কপাল ভালো নয়তো সে হয়ত করুনা করেছিল, তাই ছাঁদে ওঠলো। আমি পাশের রাস্তায় যেয়ে তাঁকে দেখতে থাকলাম, খুব কান্না পাচ্ছিলো। সেও হয়ত কাঁদছিল, বুঝতে পারছিলাম না। আসলে ভালো করে তাকাতেই পারছিলাম না, পাছে তাঁর কোন ক্ষতি হয়। মিনিট ২০ হবে, তাঁর সাথে লুকিয়ে দেখার পর্ব। সামনের দোকানদারটা কিভাবে যেন তাকাচ্ছিল। তাই বিকেলে আবার আসব বলে হোটেল এ চলে আসলাম। ভাবিনি এটাই হবে শেষ দেখা। কারণ তখনো আমার মনে অনেক আশা !

হোটেল এ এসে তাঁকে ফোন দিলাম। ভালই কথা বলছিলাম। কিন্ত, বিধিবাম। আবেগের বশে তাঁকে আবার কু-মন্ত্রনা দেয়া শুরু করলাম। নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনলে যা হয়। 
"পালাবে আমার সাথে আজকে? রেজিস্ট্রি করি চল?" 
সে উত্তর দিল, 
"আমি আজ যাবনা, তাই এই কথা বলছ? আমাকে ভালোবাসো কিনা টা নিয়ে দ্বিধায় ছিলা এতদিন?"
কি বলব আমি?
সত্যি বললে যে তুমি আর ও কষ্ট পেতা। আমি তোমার পরিবারকে অনেক আগে থেকেই আমার পরিবার মনে করি। সেই পরিবারে আমার জন্য কোন সমস্যা হক, তা চাইনি। সবচেয়ে বড় কথা, আমার চেয়ে ভালো মনে করেছে যাকে তোমার পরিবার, সে নিশ্চয়ই ভালোই হবে। নিজের পরিবারকে কেও কি কষ্ট দিতে পারে, বল?
তোমাকে যখন ফিরিয়ে দেই, তখন ইউনার কথা ভেবেছিলাম, তোমার ভাইদেরও। নাহ, এই কথাগুলু তাঁকে বলা হইনি আর নতুন করে। তাঁর আগেই যে আমি কাঁদছি অঝর ধারায়। কিছুই বলা হইনি তোমাকে। তোমাকে যে অনেক ভালোবাসি। তাও ভেবেছিলাম, তোমার পরিবার এর কথা ভেবে সব সইতে পারব। কিন্ত, না পারলাম নাহ। দিনযত কমে আসছে, আমার কষ্ট দিগুন-তিন গুন হচ্ছে। তোমাকে বলতে চাইনা, তবুও আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। সব প্রকাশ করে দিলাম, বিনিময়ে তোমার পত্তাখান পেলাম। এটাই হয়তো পাওয়ার বাকি ছিল।

আর একটা মূহর্ত সেখানে থাকতে পারলাম না। কাপুরুষরা পালিয়ে বাঁচে, আমিও সেই পথে হাঁটলাম। কিন্ত বাঁচতে কি পেরেছি? নাহ পারিনি। সারা জীবন সেই আগুন আমাকে জ্বালাবে। তোমাকে জানাবনা। অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে, আর নয়। একাই সইতে পারব আমার ভুলের কষ্ট। শুধু চাই তুমি সুখি হউ। এই পৃথিবীতে আমার আর নিজের জন্য কোন চাওয়া নেই। ইশ এই জীবনটা দিয়ে যদি তোমার মুখে সেই হাসি ফিরিয়ে দিতে পারতাম, সত্যি তাই করতাম। তোমার জন্নই আমার বেঁচে থাকতে হবে, আবার তোমার জন্নই আমার কষ্ট পেয়ে যেতে হবে। জীবন তুমি বড় অদ্ভুত।

আমার সেই মানুষটার নাম বলা হলনা। সব সত্যি কথার ভীরে একটা মিত্থে থাক। তার নাম "বাবু" ধরে নিয়ে এই লিখা চলতে থাক। আমার বাবুর জন্মদিন ২৩-শে অক্টোবর। বিবাহবার্ষিকী ১৭-ই মার্চ। এই দুইটা দিন যাতে আজীবন মনে থাকে।

বাবু সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। বুঝাতে পারবনা কত্ত। তুমি যখন অই RAK :@ কে পাশে নিয়ে থাকবে, তখন আমি হয়ত তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখাতেই বেস্ত থাকব। শুধু প্রাত্থনা, তোমাকে যাতে এমন ভালোবেসে যেতে পারি সারাজীবন। আর তুমি যাতে RAK-কে পেয়ে আমাকে ভুলে যাও। আমাকে ভুলতে না পারলে যে তুমি সুখি হবানা, এটা আমি জানি। তবে আর একটা অনুরুধ থাকবে, যা পারছনা মানতে, তা জোর করে নিজের অপর চাপিয়ে দিওনা। ভালো না লাগ্লে, সরে যেও। তোমার জন্য শুভ কামনা রইল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন